দীপাবলী আর মাটির প্রদীপের সম্পর্ক ছিল একসময় নিবিড়।কিন্তু ওই যে কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে ভাই বলে ডাকো যদি গলা দেব টিপে।এ লেখা আমাদের জানা।আকাশে চাঁদ ওঠার পর কেরোসিন শিখার দাদা বলে সম্ভোধন।আজ ঠিক এই অবস্থা ।সেই মাটির প্রদীপের…
তরুন চট্টোপাধ্যায় |
কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি আজও আছে রবীন্দ্রনাথের কবিতা হিসাবে।সব জেলাতেই আছে এক বা একাধিক কুমোর পাড়ার সন্ধান ।কিন্তু নেই মৃৎ শিল্পের কারিগরেরা।মাটির হাঁড়ি কলসি সবই তো অস্তাচলে।তাই পেটের টানে এই কুমোর শিল্পীর দল আজ অন্য পেশায় ।এখনো যে কজন পুরানো শিল্পী শিল্প কে ভালবেসে বেঁচে আছেন তাঁদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় ।
হাওড়ার ডোমজুড় বাগনান উলুবেড়িয়া এক সময় এই মৃৎ শিল্পের পীঠস্থান ছিল।কিন্তু আজ তা স্মৃতি মাত্র ।ডোমজুড়ের ভাস্কুড়ের পাতকুয়োর বেড়ের খ্যাতি ছিল রাজ্য জুড়ে ।আজ সেখানে স্মৃতি চিহ্ন ও অবশিষ্ট নেই।অন্যান্য জেলার মধ্যে পুরুলিয়া বাঁকুড়া তে কিছু কিছু কাজ হলেও তা হাতে গোনা।মৃৎ শিল্পীরা এখন শুধু ঠাকুর গড়ে।এছাড়া অন্য কিছুর বাজার নেই।
আসন্ন দীপাবলী আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে।শহর গ্রাম সেজে উঠবে দীপাবলির আলোক সজ্জায়।কিন্তু মাটির প্রদীপের গলা যেন কে টিপে দিয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই।
সরকার বিভিন্ন ভাবে অন্যান্য শিল্প কে কমবেশি সাহায্য করলেও কুমোর পাড়ার রোয়াকে রোয়াকে পৌঁছাতে পারেনি সেই দৃশ্য ।আর প্রদীপ শিল্প তো এখন বিশ বাঁও জলে।
লাল নীল হলুদ সবুজ রঙ করেও দেশীয় প্রদীপ চীনা প্রদীপের সঙ্গে লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারছে না।তাই এই পেশা থেকে মুখ সরিয়ে অন্য পেশায় শিল্পীরা।
কুমোর পাড়া আছে রবীন্দ্রনাথের কবিতায় ।বাস্তবের কুমোর পাড়া এখন গভীর ঘুমে।সরকারী উদাসীনতা ও প্রতিযোগিতায় পরাজয় আমাদের প্রদীপ শিল্প কে পৌঁছে দিচ্ছে যাদুঘরের চার দেওয়ালে।