Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পানিফল চাষ করে উচ্ছ্বাসিত প্রান্তিক চাষিরা

নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: কথায় বলে কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। সম্প্রতি একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেলার ধান পান ও মাছ চাষে ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হলেও তমলুক পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ জলবন্দি মৌজা গুলিতে পানিফল চাষ করে লাভের মুখে উচ্ছ্…

 


নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: কথায় বলে কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। সম্প্রতি একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেলার ধান পান ও মাছ চাষে ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হলেও তমলুক পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ জলবন্দি মৌজা গুলিতে পানিফল চাষ করে লাভের মুখে উচ্ছ্বাসিত প্রান্তিক চাষিরা। রেকর্ড ফলনের পাশাপাশি মোটের উপর বাজার দর ভাল হওয়ায় মুখে হাসি ফুটেছে তাদের।

প্রসঙ্গত, নিকাশি সমস্যার জেরে জল বন্দী দশা দীর্ঘসময়ের। সম্প্রতি নিম্নচাপের প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই ভোগান্তির যেন শেষ ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টির জমা জল বের হতে না পেরে মানুষের জীবনযাত্রায় তা একেবারে সরাসরি প্রভাব ফেলে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ধান, পান, সবজি পচে নষ্ট হলেও চলতি বছর পানি ফল চাষ করে বেশ খানিকটা লাভের মুখ দেখছেন তমলুক পাঁশকুড়ার ধুলিয়াপুর, কামিনাচক, খসরবন, ইটারা মৌজার বাসিন্দারা। এককথায় বৃষ্টির জলে ডুবে থাকা চাষের জমিতে ই ব্যাপকহারে এই পানিফল চাষ করে লক্ষ্মী লাভ তাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিচু জলাভূমি কিংবা জলাশয়গুলোতে এই পানি ফলের চাষ হয়ে থাকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ও তমলুকের জাতীয় সড়কের কিংবা রেল লাইনের পাশে নয়ানজুলিতে এই পানি ফলের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি বছর বর্ষায় অতি বৃষ্টির জেরে চাষের জমির ওপর বুক সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। আর এতেই বিকল্প চাষের ভাবনাচিন্তা শুরু করেন জেলার চাষীরা। ডুবে যাওয়া আমন ধানের জমিতেই শুরু হয় ব্যাপক হারে পানি ফলের চাষ। শীতের মৌসুম আসার আগেই ব্যাপক ফলন উঠে আসে চাষীদের হাতে। সেইসঙ্গে বাজার ভালো থাকায় জেলার এই পানিফল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছাড়িয়ে উড়িষ্যা, রাচি, দিল্লী, বোম্বে ম্যাঙ্গালোর পর্যন্ত শুরু হয় রপ্তানি। গড়পড়তা অন্যান্য বছরের এই পানি ফলের পাইকারি দাম পাঁশকুড়ার বাজারে থেকে ৭টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি বছরে শুরুতে সেই ৫কেজি পানি ফলের দর আড়াইশো টাকা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। তবে বর্তমানে এই দর কিছুটা হলেও নেমে এসেছে। রেকর্ড ফলন হলেও এখনো অবধি পাঁশকুড়ার পাইকারি বাজারে ৯ থেকে ১০টাকা কেজিতে এই পানিফলের বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, মিষ্টি স্বাদের রসালো এই ফল আপাতত খিদে দুর করলেও জলের যোগান এর চাহিদাও মিটিয়ে থাকে। পূজো পার্বণ এর ক্ষেত্রেও এই ফল বেশ গ্রহণযোগ্য। তাই অন্যান্য ফলের পাশাপাশি পানি ফলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। পাঁশকুড়ার কামিনাচক এর বাসিন্দা পানিফল চাষি নন্দ বেরা, সঞ্জয় সামন্ত, ধুলিয়াপুর গ্রামের সমীর মাইতি জানিয়েছেন, চলতি বছর চাষের জমিতে প্রায় ৬ ফুট পর্যন্ত জল উঠে গিয়েছে। পচে নষ্ট হয়েছে ধান পান সবজি সহ প্রায় সমস্ত কিছুই। তাই বাধ্য হয়েই চলতি বছর কিছুটা হলেও পানি ফলের চাষ আমরা বেশি করে চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আর তাতেই মোটামুটি ভাবে ফলন ভালো হতে আপাতত খেয়ে-পড়ে বেঁচে আছি। যদিও এই বেশি জল এর দরুন শীতকালে পানিফল তুলতে গিয়ে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিফল চাষিরা। তবে কঠোর পরিশ্রমের ফসল কিছুটা হলেও তুলতে পেরে মুখে হাসি ফুটেছে এই সকল প্রান্তিক চাষীদের।