Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লেখিকা তুলোশী চক্রবর্তী-এর কবিতা সংকলন

প্রিয় একজনতুলোশী চক্রবর্তী
 এ পথের শেষ কোথায়কি জানি কতো দুরে,শেষে কি আছে সুখনা মিশে যাবো নীল সমুদ্দুরে,
প্রিয় কি আসবে ফিরে কোনো একদিনসাদা কালো জীবনটা আমার হবে কি রঙ্গিন ?
চিনবে কি সে আমায় জানে সে ?আমি কত অভীমানীআমায় কিগো সেই জনভালোব…

 



প্রিয় একজন

তুলোশী চক্রবর্তী


 এ পথের শেষ কোথায়

কি জানি কতো দুরে,

শেষে কি আছে সুখ

না মিশে যাবো নীল সমুদ্দুরে,


প্রিয় কি আসবে ফিরে

 কোনো একদিন

সাদা কালো জীবনটা আমার

 হবে কি রঙ্গিন ?


চিনবে কি সে আমায় 

জানে সে ?আমি কত অভীমানী

আমায় কিগো সেই জন

ভালোবেসে বুকে নিবে টানি,


দেখিনা কত কাল 

সেই প্রিয় মুখ

যার লাল অধরের হাসি

 কেডেছে চিবুক।


********************


 খেজুর গাছের রসের হাড়ি

তুলোশী চক্রবর্তী


শোননা পেচু তুই এবার

 শীতে গ্রামে এলে,

বাগান দেখাতে তোকে

 নিয়ে যাবো চলে,

সবচেয়ে বড় গাছটা দেখবি  

নাম ওটার খেজুর,

বাঁধা ঐ যে রসের হাড়ি

মধু মিঠায় ভরপুর।


গাছের নিচে বসিয়ে তোকে

আনবো বাটুল খানা

টুকুস করে ভাঙ্গব হাড়ি

তুই টের ও পাবিনা।

তোর মাথায় হাড়ি ভেঙ্গে

বেশ মজাই পাবো 

রাগ উঠিয়ে পরোক্ষনে

ভীষণ দৌড় দিবো।


********************


: মুখোশ

তুলোশী চক্রবর্তী


সব কৃত্রিম মুখ গুলি প্রকাশিত হোক

দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হোক একবার,

যাদের অন্তরে বিষাক্ত আগুন বাইরে মধুর ফাগুন

ইচ্ছে হয় তাদের মুখোশহীন রুপ দেখবার।



অধরে মিষ্টি হাসি, ঝলমলে সাঁজ 

নকল ব্যবহারে অনন্য,পোশাকে বাবুয়ানা,

মন যে আছে কতো কয়লা কালো 

আমার আতসকাচে দেখাই যায় না।


পরনিন্দা পরচর্চা করে দিনরাত

সম্পত্তি দেখে বাড়ায় সমন্ধ্যের হাত

নিজ দেহটাকে সাজায় মিনিটে মিনিটে

 পারফিউমে খুব যত্ন করে 

তারা কি জানো? মনুষ্যত্বের স্থান 

জগতে সবার উপরে।


যত খল চাতুরি করে তারা মিথ্যেকে প্রমান করতে 

হয়তো ততো চাতুর্য্য লেখাও নেই কোনো ইতিহাসে,

জানা ছিলোনা এতকাল এই মুখোশের দুনিয়ায় ,

মুখোশ এর ভেতরে মানুষের আসল রুপ দেখা যায়।

আমি না বুঝে মুখোশ টাকে ভালোবেসেছি চিরকাল ,

তাই আসল রুপটাকে দেখে হয়ে যাই বেহাল।


কিন্তু আমার বিশ্বাস সত্য হারে না

হাজার বছর পরেও ঠিক প্রকাশিত হয়

তাই মুখোশ দেখে আর পাইনে ভয়।



********************


: জনম দুখিনী

তুলোশী চক্রবর্তী


শ্বশানে গিয়ে চিতার ধোয়ারে যাবো বলে

অভাগিনী হয়ে আমি এসেছিলাম ধরাতলে,

একটি হৃদয় শুধু মোর ছিলো

টাকাহীন ছিলাম তাই কেউ আপন না করলো,

নিজ গৃহে পিতা মাতা কেহ মনের কথা না বুঝলো।


ভেবেছিলাম কোন একজন

হয়তো করবে আপন মোরে

হৃদয় খানি নিয়ে পৌঁছিনু তার দুয়ারে,

সে বলিল _এ পাগল কি জন্য এসেছো আমার কাছে,

চলে যাও ,মরে যাও ,বদনাম করো কেন মিছে।

বুঝিনু সেদিন ভবের খেলা

আপন কেউ নয়রে পাগলা

যার লাগি ছাড়বে প্রান

পেয়েছো কি আপনের সন্ধান?


সেই জন ফিরায়ে নিলো মুখ

কভু আর ফিরে না চাইলো

দুনিয়ায় কেহ না ছিলো এ অভাগার

বিনা দোষে মোরে সবে কলঙ্কিনী বানালো।

অভিমানে অনুরাগে মায়ামোহ ত্যাগ করে

জগতে সেদিন থেকে আমি মুক্ত স্বাধীন ,

আর থাকিনে কাউকে ভয়ে ডরে,

বুঝে গেছি আমি_

কেহ আমার নয় আমি কারো নই

আত্মার দেহধারী পরমাত্মার অংশ হই।

রাগেকষ্টে বিধাতারে বলেছিনু তবু_ প্রভু কেন পাঠালে মোরে জগত মাঝারে?

দীন হীন জনে কেউ আপন না করিল।

বিধি বলে _আমি ছাড়া অন্য আপনের কিবা প্রয়োজন ছিলো?

মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও কেন করো এতো মায়া

একদিন ছাড়তে হবে তব এ কায়া।

মা পিতা সন্তান কাঁদলে একদিন দুদিন কাঁদবে,

মৃতদেহ না পুড়েই সন্তান সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা চাইবে,

কেন তবে মিছে কাঁদো বলো মোর কন্যে

এত শোক কার লাগি? কিসের জন্যে?

বহুতর কাঁদিছো তুমি ,নিজের দোষে জনম দুখিনী,

ক্ষোভ হইলে শীতল,চিরমুক্তি যদি চাও 

ধরো ঈশ্বরের পদতল।

দেখো তব আর্তনাদ শুনেছে আকাশ শুনেছে বাতাস,

তবু আপন কেহ নাহি শুনিলো।

তীর সম বাক্যাঘাতে তোমারে বিধিলো,

আপন কে তবে?তুমি নিজে আমায় বলো?


এরপরে_ বলেছিনু যমরাজে বিধি হয়েছে বাম মম প্রতি

 মোরে নিয়ে চলো তুমি দ্রুত গতি,

কিন্তু যম মোরে নাহি নিলো।


মনে মনে বলে যাই _বুঝতে সখা এ বেদনা

বুঝতে প্রিয় তুমি মোর মনের রোদনা

যদি ভালোবাসা কি তা জানতে ?


বলেছিনু বসুন্ধরার গায়ে করাঘাত করে 

 মাতা, স্থান দাও তব গর্তে শ্বশানের আঁধারে,

মাতা বলে _আকাশের তারাদের দেখ বহু যুগ ধরে রয়েছে জেগে 

শত বর্ষ আয়ু নেই তব, কেন যাবে তবে হেরে ,

কেঁদে যাও যত ক্ষত সাড়িবে আপনি,প্রকৃতির নিয়ম এটা যুগ যুগ ধরে,

কত শত কোটি মানুষ ,গিয়েছে হারিয়ে

কিছু থাকেনা চিরকাল ,জেগে ওঠো মায়া ত্যাগ করে।


সেইদিন ভুলেছিনু যত ছিলো স্মৃতি

জগতে আমার কেহ নেই গো ভারতী,

হে চিতার অগ্নিবহ্নীর ধোয়া তুমি আকাশে গিয়ে

পরমাত্মার পদতলে মোরে দিওগো মিশায়ে।