Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পুর নিগম ব্যর্থ, জল যন্ত্রণায় দুর্ভোগ হাওড়ায়

সোমনাথ মুখোপাধ্যায় পুর নিগমের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতা থাকলেও শেষ রক্ষা হলো না। দুর্ভোগ পিছু ছাড়ল না হাওড়াবাসীর। নিম্নচাপের বৃষ্টির জল নামেনি মঙ্গলবারেও। ফলে সেই পুরনো জল যন্ত্রণার ছবিই ফিরে এল হাওড়ায়। জমা জল উসকে দিল বর্ষায় বানভ…



সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 

পুর নিগমের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতা থাকলেও শেষ রক্ষা হলো না। দুর্ভোগ পিছু ছাড়ল না হাওড়াবাসীর। নিম্নচাপের বৃষ্টির জল নামেনি মঙ্গলবারেও। ফলে সেই পুরনো জল যন্ত্রণার ছবিই ফিরে এল হাওড়ায়। জমা জল উসকে দিল বর্ষায় বানভাসি হাওড়ার বিপর্যস্ত জনজীবনের চেনা জলছবি।    হাওড়া পুর নিগমের তরফে জল নিকাশির জন্য আগাম সমস্তরকম ব্যবস্থাপনা নেওয়া সত্বেও ফের ডুবল হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। একইসঙ্গে বেআব্রু করে দিল হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থাকে। পঞ্চাননতলা, কদমতলার মতো হাওড়ার নিচু এলাকাগুলিতে এমনিতেই অল্প বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে যায়। জল জমেছে সেখানে।হাওড়া পুর নিগমের তরফে সোমবার রাতের মধ্যে জল নেমে যাওয়ার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও ভাসল বেলগাছিয়া, বালিটিকুরি, টিকিয়াপাড়া, দাশনগর, রামরাজাতলা, সাঁতরাগাছি, লিলুয়া রেল কলোনি, সালকিয়া, বামুনগাছি সহ একাধিক এলাকা। জল দাঁড়িয়েছে পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস লেন, বেলিলিয়াস রোড, বেনারস রোড সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। জল দাঁড়িয়েছে এলাকার অলিতে-গলিতে। কিছু জায়গায় রাস্তা ছাড়িয়ে জল বাড়িতে, দোকানে ঢুকেছে। ফলে দোকান খুলতে সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। যানবাহন চলাচল কিছুটা কম। জমা জল ভেঙেই প্রয়োজনীয় কাজ সারতে রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে। জমা জলের কারণে ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গির মতো মশা বাহিত সংক্রামক রোগ বাড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে বাসিন্দাদের মনে। বাস কিছু কম চললেও চলেছে ট্রেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব রেলের টিকিয়াপাড়া ও পূর্ব রেলের লিলুয়ায় জল জমলেও ট্রেন চলাচল মোটের ওপর স্বাভাবিক।



ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে নিম্নচাপের বৃষ্টি। রবিবার রাতভর ভারি বৃষ্টি ও সোমবারের হালকা বৃষ্টিতে শহরবাসীর জল যন্ত্রণা চলেছে মঙ্গলবারেও। 

বৃষ্টির জল নিকাশি বারবারই  চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে হাওড়া পুর নিগমকে। ফলে আগেভাগেই প্রস্তুতি সেরে রেখেছিলেন হাওড়া পুর নিগমের কর্তারা। ছোটো বড়ো প্রায় ৪০টি পাম্প, ১২টি পাম্পিং স্টেশনকে চালু রাখা, সেসপুল গাড়ি সহ একাধিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয় পুর নিগমের উদ্যোগে। অবস্থা সামাল দিতে তড়িঘড়ি খোলা হয় বিশেষ কন্ট্রোল রুম। তৈরি রাখা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীদের। বৃষ্টি শুরু হতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল নামানোর কাজে লেগে পড়েন পুর কর্মীরা। নিজেদের এলাকায় রাস্তায় বেরিয়ে জমা জলের খোঁজ খবর নেন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের দিলীপ ঘোষ, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের শৈলেশ রায় প্রমুখ বিদায়ী কোঅর্ডিনেটররা। পুর নিগমের প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে জল নিকাশির তদারকিতে নামেন ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরী সহ অন্যান্য প্রশাসকমন্ডলীর সদস্যরা। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। জল নামেনি। জমা জলের কারণে কার্যত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাসিন্দারা বলেন, বৃষ্টি হলেই আতঙ্ক হয়। জল জমবেই। জমা জল ভেঙে যাতায়াত করতে হয়। নোংরা জল ভেঙে যাওয়াই ভবিতব্য। তাঁরা আরো বলেন, পুর নিগম সবসময়ই বলে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু কী ব্যবস্থা নেয় তা তো দেখতেই পাওয়া যায় না। হাওড়া পুর নিগমের প্রশাশকমন্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, হাওড়া শহর এমনিতেই ঘন বসতিপূর্ণ। নিকাশি ব্যবস্থাও পুরনো। তবু যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করা যেতে পারে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে জল নেমে যাবে।