সৃষ্টি সাহিত্য যাপনশিরোনাম: সময়ের যাত্রাকলমে : রাজা চক্রবর্তীতারিখ : ২৫/১১/২১.
সেদিন তোমার সঙ্গে অভিমান করে ঘর থেকে বেরিয়েছিলাম ।অভিমান করলে যে এতটাই নির্মম কঠোর শাস্তি পেতে হয় তা আমার জানা ছিল না ।আমি যেতে চাইনি জানো !বাড়ি থে…
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
শিরোনাম: সময়ের যাত্রা
কলমে : রাজা চক্রবর্তী
তারিখ : ২৫/১১/২১.
সেদিন তোমার সঙ্গে অভিমান করে ঘর থেকে বেরিয়েছিলাম ।
অভিমান করলে যে এতটাই নির্মম কঠোর শাস্তি পেতে হয় তা আমার জানা ছিল না ।
আমি যেতে চাইনি জানো !
বাড়ি থেকে বেরিয়ে, ব্যস্ত শহরের উপর দিয়ে হাঁটছিলাম ।
ভাবছিলাম তোমার জন্য একটি উপহার নিয়ে, বাড়িতে ফিরে তোমার অভিমান টা ভেঙে দেব ।
এই ভাবতে ভাবতেই,
হঠাৎ কোথা থেকে একটা বাস দুরন্ত গতিতে এসে আমাকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল ।
আমি বুঝে ওঠার আগেই, আমার শরীরটাকে পিষে দিয়ে চলে গেল ।
আমি চিৎকার করেছিলাম একবার ।
তারপর আমি ঘুমিয়ে পড়েছি ।
ঘুম থেকে উঠে দেখছি, আমি হাওয়াতে ভাসছি অথচ আমার শরীরটাকে নিয়ে ওরা কত কাটাছেঁড়া করছে ।
কিন্তু আমার কোনো ব্যথা লাগছে না ।
তারপর ওই অন্ধকার একটি ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে আরো কিছু লোকের সঙ্গে আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিল ।
আজ তিন দিন হয়ে গেল,
আমাকে তুমি পাগলের মত খুঁজছো ।
আমার বড় ইচ্ছে করছে গো,
একবার তোমার কাছে যাওয়ার ।
কিন্তু জানো বড্ড কষ্ট হচ্ছে,
তোমাকে জড়িয়ে ধরে একবার তোমার মনকে হালকা করব ভাবছি, কিন্তু করতে পারছিনা ।
আমি এখন খুব হালকা কিন্তু একটু ক্লান্ত হয়ে পড়ছি ।
তাই হয়তো তোমার কাছে যেতে পারছি না ।
শুনেছি কাল সকালে নাকি আমাকেও ওদের সঙ্গে নিয়ে যাবে শেষ যাত্রায় ।
আমাদের পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ওরা একটি করে টিকিট বেঁধে দিয়েছে ।
আচ্ছা, শেষ যাত্রা দেখতে বুঝি টিকিট লাগে ?
সকাল হয়েছে একটি ঠেলা রিক্সায়তে আমাদের চার-পাঁচজনকে তুলে দেওয়া হল ।
রিক্সাটা বড়-ছোট জানো ?
একজনের সঙ্গে আরেকজন কে ঠাসাঠাসি ও কোলাকুলি করে রিকশাতে উঠিয়ে দিয়ে পা গুলো ঝুলিয়ে দিয়েছে ।
টিকিটগুলো পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে বাধা ।
টিকিটগুলো নাচতে নাচতে কখনো রাস্তায় আঘাত পাচ্ছে, রিকশাচালকের খেয়ালই নেই ।
দুরন্ত গতিতে রিক্সা চলছে, যাত্রা শুরু হতে আর বেশি সময় নেই ।
সময়ে পৌছাতে না পারলে,
সেখানেও লাইন দিতে হবে ।
যাত্রা মঞ্চের সামনে পৌঁছে কাঠের বিছানায় শুইয়ে দিল, যাত্রা দেখার জন্য ।
তারপর আলো জ্বালিয়ে দিতেই যাত্রা শুরু ।
শুয়ে শুয়ে যাত্রা দেখছি,
চারিদিকে আলোয় আলোকময় ।
চারিদিকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে, আমি চলে যাচ্ছি সেই আগুনে, আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পুড়ে যাচ্ছে অথচ কোনো ব্যথা অনুভব হচ্ছে না,
কোনো জ্বালা অনুভব হচ্ছে না ।
শুধু এক আস্ফালন সকলের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে । ধীরে ধীরে আমিও দূর হতে দূরে, নেভা আলোর মতন, বহু দূরে, যেতে যেতে হারিয়ে যাচ্ছি এক বিন্দুতে ।
হারিয়ে যাচ্ছি.... আর যাচ্ছি.....
মহাকাশের ওই গ্রহ-নক্ষত্রের শূন্যে, সময়ের যাত্রাতে ।
R.c...@...২০/৭/২১.