দেবাঞ্জন দাস; ১৯ মে: প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারিতে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চির পরিবর্তে এই পদ্ধতিতে মাত্র ১.৫ থেকে ৩ ইঞ্চি কেটে হার্ট সার্জারি (MICS) করা হয় যা কম বেদনাদায়ক এবং প্রায় দাগহীন। এই অস্ত্রোপচারের পরে হাসপাতাল থেকে অল্প ক'দ…
দেবাঞ্জন দাস; ১৯ মে: প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারিতে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চির পরিবর্তে এই পদ্ধতিতে মাত্র ১.৫ থেকে ৩ ইঞ্চি কেটে হার্ট সার্জারি (MICS) করা হয় যা কম বেদনাদায়ক এবং প্রায় দাগহীন। এই অস্ত্রোপচারের পরে হাসপাতাল থেকে অল্প ক'দিনের মধ্যেই বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক জীবনে তাড়াতাড়ি ফিরে আসা যায়। পাশাপাশি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠাও সম্ভব।
কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, এ পর্যন্ত ৪ হাজারেরও (৪,০০০) বেশি মিনিম্যালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (MICS) সফলভাবে সম্পন্ন করার কথা জানাচ্ছে। MICS হল হার্ট সার্জারির একটি নতুন উপায়, যার অনেক সুবিধাযুক্ত।
আগে প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারি ছিল CABG (করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং), ভালভ মেরামত বা প্রতিস্থাপন, হার্টের ছিদ্র বন্ধ করা ইত্যাদির একমাত্র সমাধান। কিন্তু এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে MICS ব্যবহার করে যে সব অস্ত্রপচার করা হয় সেগুলি হল মিনিম্যালি ইনভেসিভ বাইপাস সার্জারি (MICS CABG), এন্ডোস্কোপিক ভেইন এবং রেডিয়াল আর্টারি হার্ভেস্টিং, MICS মহাধমনী ভালভ, মিনিম্যালি ইনভেসিভ মাইট্রাল ভালভ সার্জারি, কি-হোল এএসডি ক্লোজার এবং করোনারি বাইপাস।
এই কি-হোল হার্ট সার্জারি বিশেষ অস্ত্রোপচার যন্ত্র ব্যবহার করে সঞ্চালিত হয়। ভারতে ১৪.৫% মৃত্যুর জন্য হার্ট অ্যাটাক দায়ী এবং করোনারি ধমনী রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে MICS CABG বা কি-হোল বাইপাস সমাধান হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে নিরাপদে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে সক্ষম হওয়ার বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ যদি MICS সর্বত্র একটি নিয়মিত অনুশীলন হিসাবে গৃহীত হয়, তাহলে রোগীরা MICS-কে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির বাইপাস বলে বিবেচনা করবেন এবং হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হার ১৪.৫% এর চেয়ে অবশ্যই কমে আসবে৷ এছাড়াও রুটিন মাল্টি-ভেসেল বাইপাস মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেবে।
অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, ডিরেক্টর, কার্ডিও থোরাসিক এবং ভাস্কুলার সার্জন, ডাঃ সুশান মুখোপাধ্যায় জানান, “এমআইসিএস এর একাধিক ইতিবাচক কারণে রোগীর চিকিৎসায়, অস্ত্রোপচারে অতুলনীয় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এটি নিরাপদ, কার্যকরী । এই পদ্ধতিটি বেছে নেওয়া একজন রোগী ২-৩ সপ্তাহের সেরে ওঠেন এবং ৩ মাসের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। এর পরিবর্তে যদি কোনও রোগী প্রচলিত পদ্ধতি বেছে নেন তবে তাঁর সাধারণত ২-৩ মাস সময় নিয়ে পুনরায় কাজে যোগদান করতে পারবেন, মোটামুটি ৬ মাস সময় লেগে যাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে। এটি রোগীদের যন্ত্রণা থেকে বাঁচায় এবং সেইসঙ্গে তাঁর সেরে ওঠার সময়ও অনেকটাই কমিয়ে দেয়। আমরা গত দশক থেকে এমআইসিএস করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং করে আসছি এবং এই ধরনের ৪,০০০ টিরও বেশি অস্ত্রোপচার করেছি।”
উল্লেখ্য, বাইপাস, ভালভ প্রতিস্থাপন, হার্টের ছিদ্র বন্ধ করা, কার্ডিয়াক টিউমার অপসারণ, পেস মেকার ইমপ্লান্টেশন এবং অন্যান্য সহ সমস্ত কার্ডিয়াক সার্জারির ৯৫% এমআইসিএস-এর মাধ্যমে করা যেতে পারে। এটি এমনকী ৮০-৯০ বছরের বেশি বয়সী বয়স্ক রোগীদের জন্যও এই পদ্ধতিটি নিরাপদ।