#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন
কলিজা ; দ্যা কাশবন কন্যা সিরাজুল ইসলাম।
(Days pass somehow ; but night are come with a pain of wagon.)
প্রতিটা মানুষ বেঁচে থাকবে বলে লড়াই করে প্রতিনিয়তঃ। আশায় বুক বাঁধে, স্বপ্ন দেখে ছোট্ট একটুসখানী সুখি সমৃদ্ধ …
#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন
কলিজা ; দ্যা কাশবন কন্যা
সিরাজুল ইসলাম।
(Days pass somehow ; but night are come with a pain of wagon.)
প্রতিটা মানুষ বেঁচে থাকবে বলে লড়াই করে প্রতিনিয়তঃ। আশায় বুক বাঁধে, স্বপ্ন দেখে ছোট্ট একটুসখানী সুখি সমৃদ্ধ সুখময়তার প্রত্যাশায় ।
তাই তো ওরা ছুটে চলে অস্থির প্রজাপতির মতন।
কেউ সফল হয় ; কেউ হয় না।
যারা অসফল, অতৃপ্ত আত্মা হয়ে ঘুরে ফেরে এক চিলতে ভালোবাসার আকুলতায়।
সেখানেও যখন ব্যর্থ
তখন আশ্রয় খোঁজে মদ কিম্বা বেশ্যার কাছে ; খুঁজে ফেরে ঘাম চুকানো দাম দেয়া ভালোবাসার পানপাত্রটা। অথচ নারী ও নদী কেউ কারও কাছে ধরা দেয় না। "দূরের আর্তনাদের নদী ক্রন্দন কোন ঘাটে / ভ্রুক্ষেপ নেই পেয়েছে যা আলিঙ্গনের হাটে! "
পৃথিবীতে এক প্রকার প্রজাতি আছে যারা নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে তাদের রং বদলাতে বাধ্য হয়। যেটাকে আমরা গিরগিটি বলে জানি।
তুচ্ছাতিতুচ্ছ সে প্রাণীটা জানে তাকে বেঁচে থাকতে হবে। হয়তো সে কারণে তার ওই রূপের পরিবর্তন।
ভালোবাসা পাওয়ার আশায় আমিও দুরন্তগতির ঘোড়া হয়ে ছুটছি। তন্নতন্ন করে খুঁজে ফিরছি আশৈশব একচিলতে ভালোবাসা।
সেই কিশোর বেলা থেকে ঘর ছাড়া গৃহহীন মানুষ আমি। সংসারের মায়ামমতা আমায় বেঁধে রাখতে পারেনি, সে ব্যর্থতা কি আমার?
আমারও তো সাধ ছিলো স্বপ্ন ছিলো আর দশজনের মতই একজন মানুষ হয়ে সমাজে ঘুরে ফিরবো। হলো কই?
যৌবনের শুরুতে স্বপ্ন দেখতাম কেউ একজন ভালোবাসুক। আকাশবাতাস কাঁপানো সে ভালোবাসায় আমি উন্মত্ত ষাঁড়ের গতিতে ছুটবো। পারি নি, কারণ আমার চেহারায় এমন কোন মাদকতা ছিলো না, কোন সৌন্দর্যও নেই কোন মেয়ের চোখে পড়ার মতন।
দ্বিতীয়ত আমার পারিবারিক অনুশাসন আমাকে বারবার প্রত্যাখ্যাত করেছে। যেন আমি বিগড়ে না যাই। তাদের সম্মাণ, তাদের সম্ভ্রমকে মান্য করতে যেয়ে কোন নারীর প্রতি টান অনুভবের কথা প্রকাশ করতে পারিনি।
মনেমনে কষ্ট পেতাম। সমবয়সী বন্ধুরা কেমন নিটোল প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছে। নির্মলানন্দে তারা ভেসেছে।
কত ব্যর্থতার স্বাক্ষী হয়ে কতজনা চোখের সামনে দিয়ে চলে গেছে। হয়তো কেউ উজানের পথে, কেউ ভাঁটিতে।
হয়তো কাউকে ভালোবেসেছিলো-
হয়তো কারো ওপর অভিমান উগরে দিতে চেয়ে দেশসীমানা পাড়ি দেয়া মেয়েটাকে বিয়ে করে কতটুকু সুখি হতে পেরেছি কিম্বা তাকে কতোটা সুখি করাতে পেরেছি জানি না। তবে আমার গরীবত্বের শেষাবধী চেষ্টা করে গেছি সুখি করবার জন্য। বিমুখ হয়ে সরে গেছে ভাঁটিজলের মতন।
নিজের প্রয়োজনে গিরগিটি হয়েছি আমি। আঁজলা ভরে জল তুলতে যেয়ে চেয়ে দেখি, আঙ্গুলের ফাঁক গলে ঝরে গেছে সবটুকু জলকণা।
বাঁচার অদম্য ইচ্ছায় জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তোমায় পেলাম অনাহুত ভাবে।
নিঃস্কাম ভালোবাসায় জড়ালাম নিজেকে। কোন চাওয়াপাওয়ার তোয়াক্কা না করে; শুধুমাত্র বেঁচে থাকবো কারো আঁচলের ছায়াতলে। সে ভরসায়।
হায়!
প্রয়োজনের ঘোড়ার খুরে ছুটে চলা পৃথিবীতে আমার সে চাওয়াটা ছিলো নিতান্তই বোকামীর চুড়ান্ত পর্যায়ে।
মুর্খ মানুষ, বোকার হদ্দ বলেই একদিন তোমার দরজায় ছুটে গিয়েছি ভালোবাসা উজাড় করে নেবো বলে। কি ভুল, কি ভুল! আমি হেরে গেছি। ফিরে এসেছি শূণ্যহাতে ভিখেরির মতন। বুক-পাঁজর কাঁপিয়ে ঝরে গেছে দীর্ঘশ্বাসের মাতাল হাওয়া। দু'চোখের কার্ণিশে ঝরে গেছে বিধিনিষেধের ধার না ধারা তপ্ত লোনাজনের ধারা। যেটার মূল্য পৃথিবীতে কখনই কেউ দেয় না।
সমাজকে সুখি করতেই ফিরিয়ে দিয়েছো সেদিন।
না, আমি তো কোন অনুুযোগ করি নি কারও ওপর। অন্যায় অযৌক্তিক দাবী নিয়েও রুখে দাঁড়াইনি কখনও। নিজেকে পোড়াতে চেয়েছি গন্ধছড়ানো ধূঁপের মত। সন্ধ্যাআরতীর ধোঁয়াওঠা সে কান্না কেউ দেখে না।
আজ পথটা বড্ডবেশী বাঁকা হয়ে গেছে গো। সেই বাঁকা পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে তোমায় ভেবে যে কষ্ট, তা কেবল আমিই জানি। অযথা অকারণে তোমায় আজ আর কোন দোষারোপ করবো না। কেন করবো বলোতো?
আমি নিতান্তই রাস্তার মানুষ। রাস্তায় পরিচয় ; রাস্তাতেই হারিয়ে গেলাম। ভেবে নাও আমরা দূর কোন গন্তব্যের বাসযাত্রী ছিলাম। পাশাপাশি সিট পড়েছিল আমাদের। সেখানে কথা বিনিময়। তারপর একটু আবেশের আবেগে আপ্লুত হওয়া। ব্যস।
তারপর যারযার গন্তব্যটা এসে গেলে নিজস্ব ষ্টপেজে নেমে গেলাম।
হয়তো আর দেখা হবে না কোনদিনও। শত আলোকবর্ষ পার হবে এমনি করেই। হয়তো ঘুমভাঙা কোন এক মাঝরাতে তোমার বিছানায় নির্ঘুম রাতে আমায় ভেবে কষ্ট পাবে তুমি। সিথানের বালিশে দু'ফোটা জল ঝরবে তোমার অযথা অকারণে। রাতজাগা পাখি হয়ে খুঁজবে।
তখন তো রাস্তার বাঁক।সত্যিই বেঁকে গেছে অনন্তপথের অজানায়। পথের বাঁকে এসে মনে হবে অতীতটা হয়ে গেছে দূর। মিছে মায়ার সংসারে কে কার? কেউ কারও না।। সবই মিথ্যে মায়ার ছলনা। সাময়িকী আবেগ উচ্ছ্বাস। ঝরাপাতার বোবাকান্না। কে মনে রাখে তাকে?
আমি মনে রাখি। তাই তো ছিন্নপাতায় সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা। অনন্তপথ ফুরোলেই সব শেষ।
কোন দাবীতে আজ ভালোবাসা নামক অপদার্থ কথাটা মুখে নেবো। বেয়াদবরা বেয়াদপই থেকে যায় আমৃত্যু।
শুধু মনে রেখো,
"দিনের পথিক মনে রেখো, কান্না-হাসির অবহেলায়
আমি যে গান গেয়েছিলেম জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায়।"
কলিজা ; দ্যা কাশবন কন্যা।
©সিরাজুল ইসলাম।