Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন " মিতালি "কলমে : সোহিনী ঘোষ২৩/০৮/২০২২
কত স্বপ্ন কত আশা নিয়ে নতুন জীবন শুরু করেছিল মিতালি আর মৃদুল। সংসারের সব কাজের পর একটু অবসরে কাউকে যেন চাইত মিতালি। যাকে তার মনের সব কথা বলা যায়। আর সেই মানুষটিও …

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন 

" মিতালি "

কলমে : সোহিনী ঘোষ

২৩/০৮/২০২২


কত স্বপ্ন কত আশা নিয়ে নতুন জীবন শুরু করেছিল মিতালি আর মৃদুল। সংসারের সব কাজের পর একটু অবসরে কাউকে যেন চাইত মিতালি। যাকে তার মনের সব কথা বলা যায়। আর সেই মানুষটিও শুনবে তার সব কথা। মিতালি বিয়ে করেছিল শিশিরকে। বহুদিনের প্রেম পরিবারের সবার অমতে বিয়ে করেছিল তারা। বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল প্রথমদিকে সবাইকে মানিয়ে নিতে। পরে অবশ্য সবাই মেনে নিয়েছিল। দীর্ঘ বছরের প্রেম তারপর বিবাহিত জীবন। বেশ কেটেছিল জীবনের অনেকগুলো বছর। ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গেছে। একাকীত্ব গ্রাস করছে মিতালিকে।  একজন বন্ধু দরকার যার সাথে বাকি ক'টা দিন মন খুলে বাঁচা যায়।


মিতালি গান করত। গানটা সংসারের চাপে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। ছেলে মেয়ে আবার মিতালিকে জোর করে - মা তোমার একাকীত্বকে কাটাতে পারে তোমার গান। আবার শুরু করো না- মা। সংসারের ব্যস্ততায় এতগুলো বছর গান যা তোমার ভালোবাসা তার থেকে তুমি সরে ছিলে, আবার শুরু করো। সেই থেকে মিতালি আবার গান চর্চা শুরু করে। ধীরে ধীরে আবার প্রাণ ফিরে পায়। ভালোলাগাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে আরম্ভ করে মিতালি। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বেশ পরিচিতি বাড়তে থাকে মিতালির। বয়স হয়েছে কিন্তু বোঝা যায় না। চেহারার ধরণ আলগা চটক বেশ আকর্ষণীয় করে রেখেছে মিতালিকে। এই মিডিয়া থেকেই আলাপ হয় মৃদুলের সাথে। মাঝে মাঝে একটু আধটু কথা। বাড়তে বাড়তে এক নেশায় পরিণত হয়। রোজ অনেকটা সময় তারা কথা বলে। বেশ খুঁটিনাটি বন্ধুত্ব তৈরী হয়েছিল দু-জনের। মিতালি এবার একটু স্বাধীন জীবন যাপন করতে চায়। মাঝে মাঝে তারা দেখা করে, অনেকটা সময় কাটায় একসাথে। কখনও গঙ্গার পাড়ে কখনও বা রাস্তার পাশ ধরে হেঁটে চলে তারা। মিতালিকে এক নতুন নেশায় পেয়েছে। দুটো দিক বজায় রেখেই চলছিল মিতালি।


হটাৎই স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ে। মিতালির বেরোনো বন্ধ হয়ে যায়। দেখা করা মাথায় ওঠে মিতালির, সারাদিন আবার সংসার জীবন। আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে মিতালিকে। একটু স্বাধীনতার আস্বাদ পেতে না পেতেই আবার বন্দী জীবন শুরু। স্বামীর সেবা করতে হয়, সে তার স্বামীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। মৃদুল তার জীবনে হালকা একটা হাওয়া যা কিনা সামান্য ধুলোটাকে উড়িয়ে দিয়েছিল। জমে থাকা গাঢ় ধুলোর আস্তরণের প্রথম প্রলেপটা ওড়াতে না ওড়াতেই আবার চড় পড়তে শুরু করল।


কোথায় তার ভালোলাগা গান আর কোথায় বাঁধনহীন জীবন, খোলা মাঠ, প্রকৃতির সোঁদা গন্ধ - নাহ মিতালীর আর পাওয়া হবে না। এভাবেই বাকি জীবন কাটবে মিতালির।


স্বামী সংসার সামলে যখন একটু নিঃশ্বাস নিতে মন চাইত মৃদুল তখন সেই মুহূর্তটুকুতে মিতালিকে নিঃশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখত। মৃদুলের সঙ্গ মিতালিকে সাহায্য করত সংসারের কাজে আরো মনোনিবেশ করতে। কঠিন পরিস্থিতিতে মৃদুল পাশে থেকেছে ঢাল হয়ে কোন সুযোগ নিতে নয়। ভালোবাসায় বিশ্বাসে ভরসা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে মিতালিকে।


সব সম্পর্ক কেবল পরিণতি চায় না। বিশ্বাস ভরসায় সম্পর্ক অনেক গভীর হতে পারে যা কিনা অনেক কিছুর ঊর্ধ্বে।