সৃষ্টি সাহিত্য যাপনকবিতা-- গরীবের দুগ্গা টুয়া চক্রবর্ত্তী_______________________
বিলাইতি সাজে কইন্যা তুই বেশ সাজস ত!ইত্ত সুন্দর কইরে সাইজিস তুরা--শহুরে সাজ তুদের কত্ত রঙ-বাহারি ঢঙের,-দ্যাখনের সাধ জাগে বড্ড তুদের!চোখটো জুড়া…
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
কবিতা-- গরীবের দুগ্গা
টুয়া চক্রবর্ত্তী
_______________________
বিলাইতি সাজে কইন্যা তুই বেশ সাজস ত!
ইত্ত সুন্দর কইরে সাইজিস তুরা--
শহুরে সাজ তুদের কত্ত রঙ-বাহারি ঢঙের,-
দ্যাখনের সাধ জাগে বড্ড তুদের!
চোখটো জুড়াইয়া যায় তহন।
তুবে মনটো ভারি হু-হু করে, জানস ক্যান?
মুর বাসার বিটিটা আচে,উ বড্ড দুখী রে!
মুর মাইয়াটোর চক্ষের কোণটোয় প্রায়ই জল দ্যাখি--
মাইয়াটো গুমরে মরে, মুকখান ফুইট্যা কুছু কয় না।
না পায় ভালো-মন্দ খাইতে--
না পায় লুতন-লুতন জামাটো পইরতে;
কারো থিইক্যা কভু পাইল কুছু খানা-পিনা,
কহনও জুইটে কুছু লুতন কাপ্পড়-চুপ্পর--
কহন ত জুইটেই না কুছু।
পথ চাইয়া বইস্যা লয় মুর মাইয়া,
চ্যায়-চ্যায় শুদ্দু দ্যাখে মাইয়া পথের লোকজনরে,
কি সুন্দর কইরা উরা সাজে-গুজে!
ঝিকিমিকি জামাটো পইরা ঘুরে-ফিরে।
বিটির অপদার্থ বাপ মু বাপ,
ঢাকির দলটোয় ঢাকটো বাজাই ঠিকই--
তুবে বায়নাটো আর হয় কই!
আসি পুজোর শ্যাষে বাসায়।
বিটিরে দ্যাখি বাসার কাম-কম্ম বেশ সাজাইয়া করিতেচে;
বিটি উর মায়ের লগে রান্নাটো শিখিচে ভালই বটে!
আর তুদের বিটির বাসায় কুটোটি কইরতে হয় না;
তুদের বিটির বাসায় ঠান্ডা যন্তর চলে,
আয়েশ কইরা দিনটো কাটায় বটে,-
ইয়া বড় গাড়িটো চাইপা আপিচ যায়,
তুদের বিটি রেল বাসটোয় চইড়ে না,
অত্ত-অত্ত টকাকড়ি উড়াইয়া দ্যায় নিমেষে--
কিন্তু হামিদের ভেক্ষ দিতে মনটো চাহে না।
তুদের বিটি দশহাতটো নাকি আচে শুনি?
উ দশহাতটো দিয়া দশদিক নাকি দ্যাখে তুদের বিটি!
তুদের বিটি মাইয়ারে সক্কলে দুগ্গা কয়!
তুদের দুগ্গা কি তুবে বড়লোক বিলাইতিয়ানার সাতে থাইকে?
ইসব গরীব দুগ্গা-মাইয়াদের দ্যাখে কই তুদের দুগ্গা?
নাকি ঘেন্ন্যা করে লে হামিদের বড়লোকের দুগ্গারা?