Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বল্লুক গ্রামের রাস্তা সেজে উঠলো লৌকিক চিত্র আলপনায়

অরুণ কুমার সাউ, তমলুক: গতকাল ১৩ এপ্রিল রবিবার  ৩৭ তম বর্ষে বল্লুক নিউ ইয়ুথ ফোরাম-এর বিন্দুবাসিনী কালী পূজা তৎসহ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে তমলুকের বলল গ্রামের রাস্তা সেজে উঠলো লৌকিক আলপনায়। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হলো …

 


অরুণ কুমার সাউ, তমলুক: গতকাল ১৩ এপ্রিল রবিবার  ৩৭ তম বর্ষে বল্লুক নিউ ইয়ুথ ফোরাম-এর বিন্দুবাসিনী কালী পূজা তৎসহ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে তমলুকের বলল গ্রামের রাস্তা সেজে উঠলো লৌকিক আলপনায়। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হলো মাঙ্গলিক আলপনা অঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।জেলার বিভিন্ন প্রান্তের আলপনা শিল্পীর পাশাপাশি গ্রাম ও পল্লীর মেয়েরা অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতায়। মোট ৮৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে সোনালী দাস, দ্বিতীয় হয়েছে অনামিকা জানা, তৃতীয় হয়েছে সৌমদীপ বাগ, চতুর্থ হয়েছে শ্রাবণী পন্ডা, পঞ্চম হয়েছে কাকলী মাজি। প্রথম বছর এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীর উপস্থিতির হার ছিল চোখে পড়ার মতো দেখে কমিটির কর্মকর্তারা বেশ আনন্দিত। সংস্থার পক্ষ থেকে আলপনা শিল্পীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সংস্থার পক্ষ থেকে জানায় , আমাদের গ্রামের রাস্তায় আলপনার মাধ্যমে এতো সুন্দর একটা পরিবেশ উপহার দেওয়ার জন্যে আমরা আনন্দিত ও অভিভূত। পাশাপাশি প্রত্যেকটি আলপনা শিল্পীকে  কুর্নিশ জানান।

বল্লুক নিউ ইয়ুথ ফোরাম সংস্থার এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে চিত্রশিল্পী চিন্ময় ঘোড়াই বলেন, ‘আলপনা' বাংলার লৌকিক শিল্পের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ।প্রাচীন কাল থেকেই  আলপনার বিষয়বস্তুর সাথে জড়িত হয়ে আছে সামাজিক- ধর্মীয় ও নন্দন তাত্ত্বিক বিষয়। গ্রামীণ মহিলারাই এই শিল্পকলার উদ্ভাবক।আলপনা শিল্পের মধ্যে রয়েছে গৃহস্থ মহিলাদের শিল্পানুভূতি, ভাবনা ,কুশলতা, কলাজীবন, আচার, ধর্ম বিশ্বাস ও সামাজিক ইতিহাস। নারী মনের সুগুপ্ত স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষাদি আলপনার মাধ্যমে ফুটে ওঠে। আর এই জন্যেই ধর্মীয়, সামাজিক উৎসবে আলপনা রচিত হয় এবং তা প্রয়োজন শেষে মুছে ফেলা হয়।পাশাপাশি লোকসংস্কৃতি গবেষক ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক শিক্ষক জয়দীপ পন্ডা বলেন, আলপনা লোকনন্দন  চিত্রকলা। শতাব্দীর পর শতাব্দী এই শিল্পকলা তার নিজস্ব ঐতিহ্য ধারাবাহিকভাবে মানব জীবনে ও শিল্প সংস্কৃতিতে প্রভাব রেখেছে। আলপনা অনেক বিবর্তিত হয়েছে ঠিকই কিন্তু শিল্পচর্চার ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে শহরের গৃহ পরিবেশে  অনেকটা হারিয়ে গিয়েছে। উঁচু উচু ফ্যাট বাড়িতে এখন আর ধরা দেয় না আলপনা। গ্রাম্য গৃহবধুরা আলপনার রীতিটাকে আজও বজায় রেখেছে ।


বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতির কারণে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ে আলপনার প্রতি উৎসাহ হারাচ্ছে। মানুষ এখন ব্রত, অপদেবতা, বিশ্বাস করে না। হয়তো এ কারণেই আধুনিক মহিলারা আলপনা শিল্পের প্রতি অনীহা দেখান। শুধু তাই নয় বর্তমান প্রজন্মের মহিলারা মা কাকিমার কাছে প্রয়োজনীয় আলপনা শিল্প শিক্ষা অর্জন করতে পারেননি। আজকালকার মেয়েরা সেই শিল্পকলা সম্পর্কে একেবারে অজ্ঞ। ঐতিহ্যের শিকড় সন্ধানে ব্রতী হতে হবে আমাদের না হলে আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে পড়বে। এ শিল্পকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে, কেননা শিল্পের জন্য শিল্পী বাঁচে।

এ ধরনের উদ্যোগ বিভিন্ন সংস্থাকে আরো বেশি করে নিতে হবে এতে আমাদের গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে