পূর্ব মেদিনীপুর ,তমলুক: হাতে আর কয়েকটা দিন। তারপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। সারা বছর অপেক্ষার পর শারদীয়া আসতে চলেছে। কিন্তু সেই উৎসবের প্রস্তুতিতে এবার টানা বৃষ্টি যেন বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃৎশিল্পীদের জীবনে। প্র…
পূর্ব মেদিনীপুর ,তমলুক: হাতে আর কয়েকটা দিন। তারপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। সারা বছর অপেক্ষার পর শারদীয়া আসতে চলেছে। কিন্তু সেই উৎসবের প্রস্তুতিতে এবার টানা বৃষ্টি যেন বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃৎশিল্পীদের জীবনে। প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে রাতদিন এক করে, কিন্তু প্রকৃতির অনিশ্চয়তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কারিগরেরা।
তমলুকের আস্তাড়া গ্রামে মৃৎশিল্পী অনুপ ঘোড়াইয়ের অভিজ্ঞতাই যেন এ ছবিকে স্পষ্ট করে দিচ্ছে। গত বছর তিনি পেয়েছিলেন ৪৯টি দুর্গা প্রতিমার অর্ডার। এ বছর সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫-এ। শুধু তমলুক শহরের মধ্যেই নয়, জেলাজুড়ে ও ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেয় এই প্রতিমাগুলি। ফলে বাড়তি অর্ডার থাকলেও মেঘলা আকাশ ও টানা বর্ষণের কারণে এখন চরম সমস্যায় পড়েছেন শিল্পীরা।
বরাবরের মতো এসময় প্রতিমা তৈরি অনেকটাই গুছিয়ে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এবছর মাটির প্রতিমাগুলি শুকোতে দেরি হচ্ছে। রঙের কাজ আটকে যাচ্ছে বারবার। গয়না ও অলংকার বানানোর কাজও ব্যাহত হচ্ছে। শিল্পীদের পরিবারগুলির মহিলারা যেসব সরঞ্জাম রোদে শুকোতে দেন, সেগুলি প্রায়ই হঠাৎ বৃষ্টিতে বারবার ভিজে যাচ্ছে। ফলে দিনের পর দিন পিছিয়ে যাচ্ছে কাজের গতি।
অন্যদিকে অর্ডার বাড়লেও আবহাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে শিল্পীরা আর নতুন করে কাজ হাতে নিতে পারছেন না। কারণ প্রতিমা সময়মতো শুকোবে কি না, শেষ হবে কি না, সেই দুশ্চিন্তাই গ্রাস করছে তাঁদের। তবুও দমে যাননি মৃৎশিল্পীরা। সকলেরই একটাই আশা— যতই সমস্যার মুখোমুখি হোক না কেন, পুজোর আগে সব প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে হাসিমুখে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে পারবেন তাঁরা।
শিল্পীরা বলছেন, “প্রতিবারের মতো এবছরও আমরা চেষ্টা করছি সময়ের মধ্যে সব প্রতিমা পৌঁছে দিতে। আবহাওয়া আমাদের সমস্যায় ফেলেছে ঠিকই, কিন্তু মা দুর্গার আশীর্বাদে সব কাজ শেষ করতে পারব।”
বৃষ্টির মধ্যেই কাদা, রং ও তুলির লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তমলুকের প্রতিমাশিল্পীরা। আর সেই লড়াইয়ের মাঝেই অপেক্ষা করছে বাঙালির আবেগ, শারদীয়া দুর্গোৎসব।A



