পূর্ব মেদিনীপুর , তমলুক: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজনীতি। সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে প্রথম দফায় ১৮০৪ জন অযোগ্য চাকরি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেই তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলারও …
পূর্ব মেদিনীপুর , তমলুক: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজনীতি। সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে প্রথম দফায় ১৮০৪ জন অযোগ্য চাকরি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেই তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলারও একাধিক প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ফের শোরগোল রাজনীতির ময়দানে। তৃণমূল বরাবরই এই ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হলেও, জেলার তৃণমূল নেতাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ার মঞ্চে কান ধরে ওঠবস করলেন যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি ও তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর পার্থ সারথি মাইতি।
সোমবার দুপুরে ফেসবুকে পোস্ট করা তাঁর ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেখানে দেখা যায় কান ধরে ওঠবস করতে করতে তিনি বলছেন, আমি এই কান ধরে উঠবস করলাম আমাদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যে সমস্ত নেতৃত্ব টাকা নেওয়ার পরে মুখ খুলছে না এবং শুভেন্দু যে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন তারা একমাত্র কারণ আমাদের কিছু নেতৃত্ব তারা মুখ না খোলা। তাদের হয়ে মানুষের কাছে আমি কান ধরে উঠবস করছি।
তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি ছড়িয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে। দলের ভেতরেই শোরগোল শুরু হয়েছে। কারণ, এর আগেও পার্থ একাধিক ইস্যুতে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখিয়েছেন। কয়েকদিন আগে তমলুকের বিভিন্ন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের পুরসভায় কর বকেয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। তখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় কান ধরে পোস্ট করে ক্ষমা চেয়েছিলেন ‘সত্যি কথা’ বলার জন্য। ফলে বারবার তাঁর এমন অবস্থান ঘিরে অস্বস্তিতে পড়ছেন জেলা তৃণমূলের নেতারা।
নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে পার্থ সারথি মাইতি বলেন, আমাদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যা দুর্নীতি হয়েছে সেটা শুভেন্দু অধিকারী করেছে। সেই জন্য আমরা দেখতে পেয়েছি যে লিস্ট বেরিয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরে অনেকে রয়েছে। আমাদের অনেক নেতৃত্ব সেই সময় শুভেন্দু বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এবং প্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগ ছিল এবং তারা অনেকেই দুর্নীতিতে লিপ্ত। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি যে একবারই সবাই চুপচাপ রয়েছে। বিজেপির লোকরাও ধরা পড়ছে দেখা যাচ্ছে। যেখানে শুভেন্দু অধিকারী বড় বড় ভাষণ দিয়ে বলছেন লিস্টে আমার একজনেরও নাম পাওয়া যাবে না তখন কেন তৃণমূল নেতৃত্বরা মুখ খুলছে না। যদি আমার পদ যায় যাক কিন্তু মুখটা খুলুক তারা। তিনি আরো বলেন, যে ভাবে তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছে সেভাবে আমার জেলার নেতারা সরব হচ্ছেন না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পার্থ সারথি মাইতির মতো কাউন্সিলরের প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য এবং কান ধরে ওঠবসের ভিডিও বারবার ভাইরাল হওয়ায় তৃণমূলের ভেতরেই অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে উঠছে। একইসঙ্গে বিরোধীরাও সুযোগ নিচ্ছে এই বিভাজনকে হাতিয়ার করে মানুষের সামনে তুলে ধরার। ফলে জেলা রাজনীতিতে তৃণমূলের এই যুব নেতার ভিডিও ঘিরে নতুন করে সরগরম পরিস্থিতি।