তমলুক, কাজল মাইতি,দেশ মানুষ: কচিকাঁচাদের কলতানে মুখর বুদ্ধ পার্ক,এবং তমলুকের কুলবেড়িয়া ভীম মন্দির প্রাঙ্গন। তমলুকে সম্পন্ন হলো ৪১তম চক্র ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা। শীতের সকালে কুয়াশাভেজা রোদে তখন উৎসবের মেজাজ বুদ্ধ পার্কের মাঠে। একদিক…
তমলুক, কাজল মাইতি,দেশ মানুষ: কচিকাঁচাদের কলতানে মুখর বুদ্ধ পার্ক,এবং তমলুকের কুলবেড়িয়া ভীম মন্দির প্রাঙ্গন। তমলুকে সম্পন্ন হলো ৪১তম চক্র ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা।
শীতের সকালে কুয়াশাভেজা রোদে তখন উৎসবের মেজাজ বুদ্ধ পার্কের মাঠে। একদিকে দৌড় প্রতিযোগিতার ট্র্যাকে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, অন্যদিকে গ্যালারি থেকে সমানে ভেসে আসা সতীর্থদের চিৎকার— এই ছবিই ধরা পড়ল তমলুক পৌর আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪১তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়। তমলুক পুরসভার অন্তর্গত ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রায় ৭০০ জন খুদে পড়ুয়া এদিন মাঠ দাপিয়ে বেড়াল।
পৌর এলাকার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের সক্রিয় সহযোগিতায় দিনভর এক আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। বিজয়ী প্রতিযোগীদের জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় লড়াই। জানা গিয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীরা আগামী ২৭ ডিসেম্বর মেচেদার নবীন সঙ্ঘের মাঠে পরবর্তী পর্যায়ের খেলায় নামবে। সেখান থেকে উত্তীর্ণরা ২৯ ডিসেম্বর তমলুক মহকুমা স্তরে এবং সব শেষে ৫ জানুয়ারি পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ প্রাঙ্গণে জেলা স্তরের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবে।
তমলুক পৌর ক্রীড়া কমিটির সভানেত্রী নন্দিতা মণ্ডল পাল এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, “পড়াশোনার চাপ সরিয়ে রেখে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার কোনও বিকল্প নেই। বছরের এই একটা দিনের জন্য ওরা যেমন মুখিয়ে থাকে, তেমনই এই আয়োজন ওদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নেয়।”
অন্যদিকে, এদিনই কুলবেড়িয়া ভীম মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল তমলুক দক্ষিণ চক্রের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ৪টি অঞ্চলের মোট ৭৮টি প্রাথমিক ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ৩৫২ জন পড়ুয়া সেখানে অংশগ্রহণ করে। তমলুক দক্ষিণ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক সায়ন্তনী ঘোড়াই জানান, ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পৌরসভার একাংশ নিয়ে গঠিত এই সার্কেলের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা সারা বছর ধরে এই দিনটির প্রতীক্ষায় থাকেন। তাঁর কথায়, “পুঁথিগত শিক্ষার বাইরে শরীরচর্চা যে কতটা জরুরি, তা মাঠের এই ভিড় আর শিশুদের উচ্ছ্বাসই প্রমাণ করে দিচ্ছে।”
সব মিলিয়ে, শীতের দিনে তমলুকের এই জোড়া ক্রীড়া অনুষ্ঠান ঘিরে শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
