Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বেআইনি ‘চেয়ারম্যান’ নিয়োগ! তাম্রলিপ্ত পুরসভায় বড় ধাক্কা খেল রাজ্য, ভোটাভুটির নির্দেশ হাইকোর্টের

তমলুক ,  কাজল মাইতি, দেশমানুষ : এক মাসও কাটল না। আদালতের নির্দেশে অপসারিত হতে চলেছেন তাম্রলিপ্ত পৌরসভার ‘অস্থায়ী’ চেয়ারম্যান চঞ্চল কুমার খাঁড়া। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, চঞ্চলবাবুর নিয়োগ সম্পূর্ণ ‘অবৈধ’। আগামী …


তমলুক ,  কাজল মাইতি, দেশমানুষ : এক মাসও কাটল না। আদালতের নির্দেশে অপসারিত হতে চলেছেন তাম্রলিপ্ত পৌরসভার ‘অস্থায়ী’ চেয়ারম্যান চঞ্চল কুমার খাঁড়া। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, চঞ্চলবাবুর নিয়োগ সম্পূর্ণ ‘অবৈধ’। আগামী এক মাসের মধ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অনাস্থা প্রস্তাব ও ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন চেয়ারম্যান বেছে নিতে হবে ওই পৌরসভাকে। আদালতের এই রায়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূলের একাংশ।

​ঘটনার সূত্রপাত গত নভেম্বর মাসে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তৎকালীন চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় পদত্যাগ করার পর, গত ১৮ নভেম্বর নগরোন্নয়ন দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার খাঁড়াকে অস্থায়ীভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের এই ‘মনোনীত’ পদ গ্রহণ করতে পারেননি অনেক কাউন্সিলর।

​এই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন বিজেপি কাউন্সিলর জয়া দাস নায়েক ও শবরী চক্রবর্তী। মামলার শরিক হন বহিষ্কৃত তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতিও। তাঁদের দাবি ছিল, কাউন্সিলরদের মতামত না নিয়ে ওপর থেকে চেয়ারম্যান চাপিয়ে দেওয়া গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থী।

​আদালতের পর্যবেক্ষণ

​মঙ্গলবার বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। আদালত জানিয়ে দেয়

​চঞ্চল কুমার খাঁড়াকে চেয়ারম্যান পদে বসানো পদ্ধতিগতভাবে ভুল।

​মঙ্গলবার থেকেই তিনি আর চেয়ারম্যান হিসেবে গণ্য হবেন না।

​এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলরদের মধ্যে ভোটাভুটি করে নতুন বোর্ড গঠন করতে হবে।

​আইনজীবীদের মতে, এই রায়ের ফলে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোনও সরকারি নথিতে সই বা নতুন প্রকল্পের কাজ করতে পারবেন না।

​আদালতের রায়ে স্বভাবতই খুশি বিজেপি শিবির। কাউন্সিলর জয়া দাস নায়েকের কথায়, “গণতন্ত্রের জয় হলো। জোর করে চেয়ার দখল করে রাখা যায় না।” অন্যদিকে, মামলার আরেক পক্ষ পার্থসারথি মাইতিও এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

​পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চঞ্চল কুমার খাঁড়া বলেন, “দল ও সরকার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। আদালত যদি অন্য নির্দেশ দেয়, তা মাথা পেতে নিতে হবে। তবে বিজেপি গায়ের জ্বালায় এসব করছে।”

​আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, হাইকোর্টের এই নির্দেশের কিছুক্ষণ পরেই তমলুক শহরে ধুমধাম করে ‘হ্যালো চেয়ারম্যান’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চঞ্চলবাবু। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কলকাতা পুরসভার ধাঁচে এই জনপরিষেবা প্রকল্পের সূচনা হয়। সেখানে বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে তাঁকে আগের মেজাজেই দেখা যায়। আদালতের রায়ের পর যেখানে তাঁর পদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, সেখানে এই কর্মসূচি ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

​এখন দেখার, আদালতের নির্দেশের পর নবান্ন তথা নগরোন্নয়ন দফতর তাম্রলিপ্ত পৌরসভার অচলাবস্থা কাটাতে কী পদক্ষেপ নেয়।