তমলুক, কাজল মাইতি,দেশ মানুষ: ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী তমলুক রাজবাড়ীর আম্রকুঞ্জ। বিগত তিন দিন ধরে সেই প্রাচীন প্রাঙ্গণেই বসেছিল এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক মেলা। 'রঙ্গন পার্বন' আয়োজিত অষ্টম বর্ষ নাট্য উৎসবটি ১২, ১৩ এবং ১৪ ডিসে…
তমলুক, কাজল মাইতি,দেশ মানুষ: ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী তমলুক রাজবাড়ীর আম্রকুঞ্জ। বিগত তিন দিন ধরে সেই প্রাচীন প্রাঙ্গণেই বসেছিল এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক মেলা। 'রঙ্গন পার্বন' আয়োজিত অষ্টম বর্ষ নাট্য উৎসবটি ১২, ১৩ এবং ১৪ ডিসেম্বর নাট্যপ্রেমীদের জন্য নিয়ে এসেছিল এক নতুন উন্মাদনা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মোট দশটি নাট্যদল, প্রায় ১০০ জন শিল্পী, এই উৎসবে তাঁদের শিল্পসৃষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।
গত কয়েক বছর ধরেই এই উৎসব শুধুমাত্র মঞ্চনাটকের চৌহদ্দিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। উৎসবের অঙ্গ হিসেবে ছিল ছবি আঁকা, নাচ-গান, কবিতা পাঠ, এবং বিভিন্ন ধরনের বাদ্য ও যন্ত্রসংগীতের অনুষ্ঠান। এই বহুবিধ শিল্পকলার সমাহার উৎসবটিকে প্রকৃত অর্থেই 'মানুষের উৎসব' করে তুলেছিল। তমলুক শহরের সুধী সমাজ ও দূর-দূরান্তের নাট্যপ্রেমীরা তিন দিন ধরে ঐতিহাসিক আম্রকুঞ্জে ভিড় করেছিলেন।
উৎসবের প্রথম দিনের মূল আকর্ষণ ছিল নাট্যদল সংশপ্তক, হলদিয়া-র প্রযোজনা 'ভগিনী সেনা'। নাটকটি রচনা করেছেন অনুপম দাশগুপ্ত এবং নির্দেশনায় ছিলেন শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজকের প্রজন্মের মেয়েরা যখন নিজেদের কেরিয়ার আর মোবাইল রিলস, ইনস্টাগ্রামের ব্যস্ত দুনিয়ায় ডুবে, তখন 'ভগিনী সেনা' প্রশ্ন তোলে ইতিহাসের দায়বদ্ধতা নিয়ে। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে, বিশেষত অবিভক্ত বাংলার মেদিনীপুরের মেয়েরা যে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন, আজকের প্রজন্ম কি সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিচ্ছে? বর্তমানের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে নারীরা স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের জন্য কতটা সচেতন, সেই গভীর প্রশ্নটিই অত্যন্ত নিপুণভাবে এই নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর নাট্যমহলে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
তিন দিনের এই নাট্য উৎসব তমলুক শহরের সাংস্কৃতিক মানচিত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করল।
